বিসিবি সভাপতি ফারুকের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ
ক’দিন আগেই ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিবের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের মনোমালিন্যের খবর সামনে আসে। এবার বোর্ডের অন্যতম প্রভাবশালী পরিচালক এবং দেশের ক্রিকেটের পরিচিত মুখ নাজমুল আবেদিন ফাহিমের সঙ্গেও তার দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
দেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেল যমুনার সঙ্গে আলাপকালে পরিচালক ফাহিম বোর্ডপ্রধান ফারুকের দুর্ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সব খোলাসা না করলেও তিনি বলেছেন, ‘ওরকম একটা মন্তব্য… আমি স্পেসেফিক বলতে চাই না মন্তব্যটা কী ছিল, তবে সেটা আমাকে খুবই হতাশ করেছে। সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে এই মুহূর্তে ক্রিকেট বোর্ড বা প্রেসিডেন্ট হয়ত আমাকে তার আত্মবিশ্বাসের জায়গায় নিচ্ছেন না।’
বোর্ডপ্রধানের এমন আচরণে হতাশ ফাহিম। বোর্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘আমার মাঝেমাঝে মনে হয় বোর্ডে না থাকলেই বুঝি ভালো হয়। কারণ বোর্ডের বাইরে থেকে আমি যে ভূমিকা রাখতে পারি বা কথা বলতে পারি, তা বোর্ডে থেকে সম্ভব না। আমি যদি বোর্ডে থাকি, আমাকে কাজ করতে হবে। যদি কাজ করতে না পারি, তার চেয়ে ভালো বাইরে থাকা।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে দলটির সাবেক সংসদ সদস্য এবং তৎকালীন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ‘আত্মগোপনে’ চলে যান। পাপনের জায়গায় বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পান ফারুক আহমেদ। একইসময় বোর্ড পরিচালকের চেয়ারে বসেন নাজমুল আবেদিন ফাহিম। কিন্তু একসঙ্গে দেশের ক্রিকেটকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিলেও এখন তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
এর আগে গত বছরের শেষদিকে ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিবের সামনে ‘বিব্রতকর’ পরিস্থিতিতে পড়তে হয় বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদকে। সূত্র জানিয়েছে, বিপিএলের শুরুর দিনের কিছু বিশৃঙ্খলা এবং অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রেস সচিব মাহফুজ বিসিবি সভাপতির কাছে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
টিকিট নিয়ে বিশৃঙ্খলা, গ্যালারিতে আবু সাঈদ কর্নার ও দর্শকদের বিনা মূল্য পানি পানের জন্য মুগ্ধ কর্নারের প্রস্তুতিতে দেরি এবং জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহত ১০০ জনের সৌজন্য টিকিট পেতে দেরি হওয়া নিয়ে বোর্ড সভাপতির কাছে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানান।
‘অন্যরকম’ বিপিএল আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিলেও আসলে ঠিক কোন জিনিসটা অন্যরকম হয়েছে, সে প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেড়িয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালও। কনসার্ট ছাড়া আর কিছু তার চোখে পড়েনি বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
এছাড়া সংশ্লিষ্টদের আশা ছিল, হয়ত এবার নতুন চেহারার বোর্ডের অধীনে পারিশ্রমিক সংক্রান্ত কারণে বিপিএল খবরের শিরোনাম হবে না। তবে সেদিক দিয়েও হতাশ হয়েছে। বিপিএল শুরু হতেই খেলোয়াড়দের মুখে শোনা গেছে, তারা কোনো অর্থ বুঝে পাননি।
অনেক স্বপ্ন-সম্ভাবনার মশাল জ্বালিয়ে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেওয়া ফারুক আহমেদের চেয়ার যে এখন বেশ নড়বড়ে হয়ে উঠেছে, তা বললেও চলছে। এর ফলে দেশের ক্রিকেটের সংকটও নিশ্চিতভাবেই আরও ঘনীভূত হবে। এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উত্তরণের জন্য বিসিবি সভাপতিকেই আশু পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া টুর্নামেন্ট চলাকালে এমন অব্যবস্থাপনা আর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিশ্চয়ই কারও কাম্য নয়।
মতামতঃ-ক্রমানুসারে
Post a Comment